লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপদহে জনজীবন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘনঘন লোডশেডিং। এ যেনো তীব্র গরমের সাথে প্রতিযোগীর মত হয়ে উঠেছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। বেপরোয়া এই লোডশেডিংয়ে একদিকে যেমন অস্বস্তি ও অতিষ্ট হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলাবাসী। অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরু ও মুরগির খামারিরা।

 

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

 

এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শিবগঞ্জ জোনাল অফিস বলছে, চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়ার কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড তাপদাহ আর দিনে-রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে শিবগঞ্জবাসীকে। গ্রাহক চাহিদা মেটাতে না পারায় বিদ্যুৎ বিভাগও অসহায়। আর অসহনীয় তাপপ্রবাহের কারণে শিশু ও বয়স্করা মারাত্মক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিবগঞ্জ জোনাল অফিসের অধীনস্থ ৩টি স্টেশনে প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহকের প্রায় ২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই ৫০ শতাংশ লোডশেডিং শিবগঞ্জ জোনাল অফিসের নিয়মে পরিণত হয়েছে।

 

 

ধোবপুকুর বাজারের দোকানদার নাসিম, এমদাদ. জিন্নুর, ও আরাফাত রহমান বলেন, আশ্বিন মাসে এমন অস্বাভাবিক গরম জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল অনেকটা সীমিত।

মুরগির খামারি কাউসার আলী বলেন, ২৪ ঘণ্টায় আমরা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এতে আমার বয়লার মুরগি গরমে মরে যাচ্ছে। গত ২ দিন আমার খামারে ৬শ’ মুরগির মধ্যে ৮০/৯০টি মুরগি মারা গেছে। এরকম লোডশেডিং চলতে থাকলে আমার খামারের একটিও মুরগি বাঁচাতে পারবো না।

এদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে ছোট ছোট শিশুরা ক্লাসে বেশ কষ্ট করছে। পাশাপাশি লোডশেডিংও রয়েছে। এ কারণে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছে না। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষকরাও গরমে ক্লাস নিতে কষ্ট করছেন। গত কয়েকদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ তাপমাত্রা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।

এব্যাপারে শিবগঞ্জ জোনাল অফিসের কর্মকর্তা উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম বলেন, আমার এই জোনাল অফিস প্রায় ৭০ কি.মি দূরত্ব এলাকায় ৩টি স্টেশনের আওতায় ৯০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গ্রাহকদের প্রায় ২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই ৫০ শতাংশ লোডশেডিং শিবগঞ্জ জোনাল অফিসের নিয়মে পরিণত হয়েছে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে দিনে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এছাড়া রাতে প্রায় ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তাই আমাদের লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

ডিজিএম রেজাউল করিম বলেন, ব্যাটারি চালিত বিভিন্ন যানবাহন সারাদিন চলাচলের পর রাতে একযোগে চার্জে দেয়ার ফলে বিদ্যুতের লোড বাড়ছে। এই লোড বাড়ার কারণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে লোডশেডিং করছি না। আমাদের চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় এই লোডশেডিং।

 

 

তিনি বলেন, যদি জাতীয় গ্রেড থেকে চাহিদামত বিদুৎ সরবরাহ করা হয় তাহলে লোডশেডিং কমে আসবে। বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষোভ বাড়ছে শিবগঞ্জবাসীর। বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ক্ষোভের মাত্রা বাড়ছে। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাক্তার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এই তীব্র গরমে খামার মালিকদের নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তাদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি।

 

আরও পড়ুন:

Leave a Comment